সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণে যে কোন প্রাণীর ও মানুষের ছবি অংকন ও প্রদর্শন (বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া) এবং মানুষ ও প্রাণীর ভাস্কর্য স্থাপন নিষিদ্ধ ও গুনাহ বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের খ্যাতনামা, প্রবীণ ইমাম-খতিব ও ওলামায়ে কেরামগণ।
মঙ্গলবার এশিয়াখ্যাত জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও বার আউলিয়া মোকাররম জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মুফতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে ওলামায়ে কেরামগণ ইসলামী শরীয়তের বরাত দিয়ে উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করেন।
বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি ইসলামের প্রবেশদ্বার এবং অসংখ্য আউলিয়া কেরামের পদধুলিতে ধন্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মসজিদের ইমাম ও খতিবসহ বিশিষ্ট ইসলামী মনিষীগণ বিবৃতিতে আরও বলেন, হাদীস শরীফে প্রাণীর ছবি অংকনকারী (প্রতিকৃতকারী/ চিত্রকরদের উপর) রাসূলে আকরাম (সা.) লানত (অভিসম্পাত) করেছেন (সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৫৯৬২)। অপর হাদিসে রাসূলে পাক (সা.) ইরশাদ করেছেন কিয়ামতের দিবসে আল্লাহ তা’আলার সামনে এরা (ছবি অংকনকারী, প্রদর্শনকারী, প্রতিকৃত স্থাপনকারী) হবে সবচেয়ে নিকৃষ্ঠ ব্যক্তি (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং- ৫২৮)।
আলেমগণ বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে (চাকুরী, পাস পোর্ট, ভিসা, বিদেশ গমন, হজ, ওমরা ও প্রয়োজনীয় রেকর্ড ইত্যাদির) ক্ষেত্রে মানুষের ছবির ব্যবহার ও সংরক্ষণ হারাম ও গুনাহ পর্যায়ে অর্ন্তভূক্ত হবে না। এটাই ইসলামী শরীয়তের ফয়সালা। দেশে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা ও হুমকি ধমকি দেয়া, সংঘাত সৃষ্টি করা ইসলামের এবং হক্কানী ওলামায়ে কেরামের আদর্শ নয় বলেও মত দেন তারা।
আলেমগণ আরো বলেন, অন্যান্য ভাস্কর্য়ের বিষয়ে খামোশ ও চুপ থেকে শুধু ব্যক্তি বিশেষের ভাস্কর্য নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা সীমালঙ্ঘন ও ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টির নামান্তর। আর ফিতনা হত্যা হতেও কঠিন অপরাধ, যা কোন হক্কানী আলেমের আদর্শ হতে পারে না। প্রয়োজনে মিশর, মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়াসহ মুসলিম বিশ^ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মানুষ অথবা প্রাণীর ছবি ও ভাস্কর্যের বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিকোণে ফতোয়া তলব করে সমস্যা নিরসন করা উচিত। ওলামায়ে কেরামগণ দেশে সকল ধরণের সংঘাত ও অশান্তি সৃষ্টি করা হতে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রিন্সিপাল মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমানসহ বিবৃতিদাতারা হলেন সীতাকু- মোস্তফা হাকিম কলেজ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইউনুছ রজভী, হাটহাজারী মির্জাপুর রজকআলী শাহী জামে মসজিদের খতিব ড. মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল হালিম কাদেরী, অক্সিজেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেয মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুর রহমান, কাজীপাড়া জামে মসজিদের খতিব প্রখ্যাত ওয়ায়েজ মাওলানা নুর মোহাম্মদ আলকাদেরী, হাটহাজারী মুজাফফরাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব শাইখ আল্লামা হাসান আজহারী, শহীদনগর গাউসিয়া জামে মসজিদের খতিব হাফেজ ক্বারী ফোরকান রব্বানী, হাটহাজারী আকবর শাহ জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ ক্বারী নজরুল ইসলাম, অক্সিজেন গাউসিয়া তৈয়্যবিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা খলিলুর রহমান, আতুরার ডিপু হাশেম বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইউছুপ আলকাদেরী, বায়েজীদ বোস্তামী শীতলঝর্ণা আবাসিক এলাকা মসজিদে রহমানীয়া গাউসিয়ার খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা বোরহান উদ্দীন, ফতেয়াবাদ ইসলামীয়া হাট ফয়েজ উকিল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আহমদ রেজা কাদেরী, আমান বাজার জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা নুরুল আমিন, লালিয়ার হাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ রেজা প্রমুখ।